এক যে খুকি আরাত্রিকা, সাড়ে এগারো বারো-
বন্ধুহীন একাকিত্বে, শৈশব আজ তারও।
খেলার মাঠ হাতছানি দেয়, বদ্ধ বিকেল তার।
শিশু কন্যার সকাল–সন্ধ্যা, টিউশনে নেই ছাড়।
তার শ্রমের কাহিনি নিয়ে, লেখা হবে না গল্প—
স্কুলের ব্যাগ তো সবার ভারী, অভ্যেস হোক অল্প।
খানিক খানিক ছবি আঁকা, পড়ার সঙ্গে গান,
এস. এস. টি আর বাংলা হিন্দি, রোবটিক্স এর তান।
এ.আই সাথে কম্পিউটার, সঙ্গে অ্যাবাকাস,
হপ্তা হপ্তা ক্লাস টেস্ট, প্রোজেক্ট ভরা আকাশ।
সূর্য ওঠে অস্ত যায়, ওঠে আকাশে চাঁদ,
মধ্যবিত্ত শিশু শ্রমিকের, সেসব দেখা বাদ।
তার খেলাও বাধাধরা, সেটাও কোচিং ক্লাবে –
বন্ধু নেই- ডাকে না খেলতে, মা-ই নিয়ে যাবে।
বাউন্ডুলে হওয়া বারণ, সব সময়ে মাপা,
বিনি পয়সার শ্রমিক খুকি, ভাগ্য শ্রমে চাপা।
খাওয়ার সময় কার্টুনে চোখ, চেবাও তাড়াতাড়ি –
পরাধীন খুকি সময়ের টানে, তাড়নার বাড়াবাড়ি।
পুলকার তার সাত সকালে, রেজিস্থানের উট,
বুট জুতো পায়, টাইটি গলায়, গোগ্রাসে গিলে ছুট।
ইংরেজি তার শিখতেই হবে-সাহেবি ভাষায় মুক্তি,
ইঁদুর দৌড়ে-না পিছিয়ে, এগিয়ে চলার যুক্তি।
গ্রীষ্ম শীতে ছুটি পড়ে-টাস্কের বোঝা ঘরে,
ছুটিতে ও তার দম ছোটে প্রায় – একটু ছুটির তরে।
না চাইলেও উপায় নেই – সমাজ টিপছে টুটি–
দম বন্ধ শিক্ষার জেলে, নেই তার কোন ছুটি।
ভাই বোন নেই, বন্ধু শূণ্য, ফ্ল্যাটে ভরা তার পাড়া,
ফ্ল্যাট কালচারে অচেনা সবাই -স্কুলের বন্ধু ছাড়া।
পাখি খাঁচা মাঝে, ভারী ব্যাগ কাঁধে, খুকি শ্রমিকের শ্রমে,
দেখি তারে আমি, খুদে পায়ে পায়ে, শিশু শ্রমিকের ভ্রমে।
ভূতের রাজার জুতো জোড়া আর গুপী, বাঘার তালি–
ক্লান্ত খুকির ঘুমের ভেতর, স্বপ্নে আসে খালি।